বর্তমান সময়ে যে কয়েকজন আলোচিত
অনলাইন এক্টিভিস্ট রয়েছেন, তার মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুল স্যার অন্যতম। ছাত্র
জীবনে সাপ্তাহিক বিচিত্রার সাংবাদিক হিসেবে তিনি অনেক সুনাম অর্জন করেন। তিনি
একাধারে একজন লেখক, ঔপন্যাসিক, রাজনৈতিক বিশ্লেষক এবং কলামিস্ট। সংবিধান বিশেষজ্ঞ
হিসেবেও তাঁর খ্যাতি রয়েছে।
‘নিষিদ্ধ কয়েকজন’ উপন্যাসের
মাধ্যমে তিনি অনেক খ্যাতি অর্জন করেন। বর্তমানে তার লেখা উপন্যাসের সংখ্যা ১২ টি।
এছাড়াও রাজনীতি ও সুশাসন বিষয়ে রয়েছে ৫ টি বই। “পিএইচডির গল্প” তাঁর লেখা প্রথম
আত্মজৈবনিক গ্রন্থ।
বইটিতে তিনি তাঁর পিএইচডি করার সময়ে
ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা উল্ল্যেখ করেছেন। কিভাবে তিনি পুরান ঢাকার গলি থেকে লন্ডনে
পিএচডি করতে গেলেন সেই সংগ্রামের দিনগুলোর কথা উঠে এসেছে বইটিতে। বইটিতে তিনি শুধু
তার পিএইচডির গল্পই তুলে ধরেননি, সেই সাথে তুলে ধরেছেন তাঁর ব্যক্তিগত জীবনের নানা
টানাপোড়েনের কথা। কিভাবে তিনি স্কুল জীবন পার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলেন,
বিচিত্রা পত্রিকায় সাংবাদিকতার অভিজ্ঞতা, ৩৬ দিনের মেজিস্ট্রেট জীবনের অভিজ্ঞতা,
মেজিস্ট্রেটের চাকরি ছেড়ে দিয়ে আবার সাংবাদিকতা শুরুর কথা, পরবর্তী সময়ে ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ লাভ এবং পাঠদান, শিক্ষার্থীদের সাথে
বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের কথা কোনো কিছুই বাদ যায়নি বইটিতে।
১৯৯৪ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর
পিএইচডি করার উদ্দ্যেশে তিনি ঢাকা থেকে লন্ডন যাত্রা করেন। শুরু হয় হাসি-কান্না,
দুঃখ-দূর্দশা এবং ভয়াবহ সংগ্রামের কাহিনী। শুরুতে তিনি লন্ডন হাউজে থাকতেন।
পরবর্তী সময়ে ভাড়া করা বাসায় উঠেন। লন্ডন হাউজে থাকার সময় সেখানে কাটানো দিনের অনেক
স্মৃতিচারণ উঠে এসেছে বইটিতে। পিএইচডি করার সময় লেখক সেখানকার স্টুডেন্ট
রিপ্রেজেন্টেটিভ নির্বাচিতও হয়েছিলেন। পুরো সময়ে অসংখ্য শুভাকাঙ্ক্ষীর সমর্থন ও
দোয়া পেয়েছিলেন তিনি, যা তার পথ চলা সহজ ও সুগম করেছিল অনেকাংশেই।
শুরুতে পড়াশোনায় মনোযোগ না
দেওয়াতে লেখককে খুব বাজেভাবে হোঁচট খেতে হয়। প্রথমদিকে তার গবেষণা দেখে অধ্যাপক
গবেষণার নিম্নমান ও অগভীরতায় বিস্মিত হন। পরবর্তী সময়ে কঠোর পরিশ্রম করে লেখক
মাত্র সাড়ে চার বছরে সম্মানের সাথে পিএইচডি গবেষণা শেষ করেন। অবসান ঘটে অনন্ত লড়াই
সংগ্রামের, সেই সাথে অবসান ঘটে অপমান-অবহেলার। অধ্যাপক ফিলিপ কতৃক লাঞ্চ ও চাকরির
অফারের মাধ্যমে শেষ হয় লেখকের পিএইচডির গল্প।
No comments:
Post a Comment