এটা বঙ্কিমচন্দ্রের রচিত প্রথম উপন্যাস
এবং বাংলা সাহিত্যের প্রথম সার্থক উপন্যাস। বঙ্কিমচন্দ্রের দাঁতভাঙা লেখার জন্য তিনি
আগে থেকেই বিখ্যাত। এরজন্যই তার লেখার প্রতি ঝোঁক টা একটু বেশি। আসলে সাহিত্যের ভাষা
যদি অতি সহজেই বোধগম্য হয়ে যায় তবে সেখানে সাহিত্যরস পাওয়া যায়না। এই কারনেই তারাশঙ্কর,
সৈয়দ মুজতবা আলী, শওকত ওসমান, শরৎ, রবীন্দ্রনাথের লেখাগুলাও আমাকে টানে বেশি। এদের
লেখা অনেক বইয়েই এক বাক্য পরপর কয়েকবার পড়ে বুঝতে হয়!
আর বঙ্কিমের লেখার বিশেষত্ব হলো একটা জিনিসকে বিভিন্ন
রকম উপমা দিয়ে বিশেষায়িত করেন। এই উপন্যাসের প্রতিটা শব্দচয়নে মুগ্ধ হয়েছি। প্রথমে
বই নিয়ে এসে ভাবছিলাম এটা আদ্যোপান্ত কিছুই বুঝতে পারবোনা। কিন্তু পড়তে যখন শুরু করলাম
এরমধ্যে ডুবে গিয়েছিলাম একদম।
★কাহিনি সংক্ষেপঃ
দিল্লীশ্বরের প্রধান সেনাপতি মানসিংহের
পুত্র জগৎসিংহ বিষ্ণুপুর থেকে মান্দারন প্রত্যাবর্তনের সময় ঝড়ের কবলে পরলে শৈলেশ্বরের
মন্দিরে আশ্রয় নেয়। আর সেখানেই সাক্ষাৎ হয় মহারাজ বীরেন্দ্রসিংহের কন্যা তিলোত্তমা
ও তার সহধর্মিণী বিমলার সাথে। প্রথম দর্শনেই রাজপুত্র তিলোত্তমার প্রণয়ী হয়ে যায়। আর
তিলোত্তমাও রাজপুত্রের অনুরক্ত হয়। সেখানে পূর্বের কিছু পারিবারিক জটিলতার কারনে সে
রমনীদিগের পরিচয় পান না। পরে ঘটনাচক্রে আবার তাদের যখন পুণরায় সাক্ষাৎ হয় তখনই পাঠান
সেনাপতি ওসমান বীরেন্দ্রসিংহের প্রাসাদ আক্রমণ করে এবং তিলোত্তমা, জগৎসিংহ, বিমলা এবং
বীরন্দ্রসিংহকে বন্দি করে। বন্দির পর বীরেন্দ্রসিংহকে হত্যা করে। ওদিকে জগৎসিংহ বন্দির
সময় গুরুতর আহত হওয়ায় কতলু খার কন্যা আয়েষা স্বয়ং তার শুশ্রূষা করে তাকে সুস্থ করে
তোলে।আয়েষা ধীরে ধীরে জগৎসিংহের অনুরাগিণী হয়ে যায়। আয়েষা অগত্যা তার হৃদয়ের কথা জগৎসিংহের
নিকট ব্যক্ত করলেও রাজপুত্র তার প্রত্যুত্তর করেনা। ওসমান আয়েষার প্রতি দুর্বল থাকায়
সে জগৎসিংহকে ঈর্ষা স্বরূপ বধ করার চেষ্টা করে এবং বিফলে যায়। বিরেন্দ্রসিংহের স্ত্রী
তার স্বামী হত্যার প্রতিশোধ নিতে কৌশলে কতলু খাঁকে হত্যা করে। এরপর পাঠান আর মানসিংহ
যখন সন্ধিতে আসে তখনই তিলোত্তমা এবং জগৎসিংহের মিলন ঘটে।
হ্যাপি রিডিং…
তাহমিনা ইসলাম মারিয়া
তৃতীয় ব্যাচ
ভূমি ব্যবস্থাপনা ও আইন বিভাগ
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা
No comments:
Post a Comment